নড়াইল থেকে পাবনায় বদলি হয়ে কাজে যোগদানের ১৫ দিন পরই বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাবনা শহরের প্রাণকেন্দ্র আব্দুল হামিদ সড়কের তাঁতী সমবায় মার্কেটে অবস্থিত সমিতির কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। এ সময় সিভিল সার্জনকে সংবর্ধনা দেয় ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল মোমেন নড়াইলে আট মাস দায়িত্ব পালন করেন। ১৯ জানুয়ারি নড়াইল থেকে পাবনায় বদলি হয়ে আসেন। ২০ জানুয়ারি কাজে যোগ দেন। যোগদানের পর দুদিনের সরকারি ট্রেনিং শেষ করেন তিনি।
এরই মধ্যে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতি তার জন্য সংবর্ধনার আয়োজন করে। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে সিভিল সার্জন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যান। সেখানে সিভিল সার্জনকে আপ্যায়ন করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমিতির এক সদস্য বলেন, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সিভিল সার্জনকে ক্রেস্ট দেওয়া হয়। কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে সিভিল সার্জনকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এজন্য সমিতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা সেখানে যান। কিন্তু সমিতির কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের কার্যালয় থেকে বের করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। দেড় ঘণ্টা পর বৈঠক থেকে বের হন সিভিল সার্জন।
বৈঠকে বেসরকারি ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমানসহ অন্যান্য ক্লিনিক মালিক ও সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পাবনা শহরসহ জেলার অলি-গলিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ভুল চিকিৎসায় এসব ক্লিনিকে অনেক রোগী মারা যায়।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, জেলায় ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১৩৬টি। এর মধ্যে বেসরকারি ক্লিনিক ৯০টি। এসবের অধিকাংশের লাইসেন্স নেই। অনেকগুলো চলছে অবৈধভাবে। মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে এসব ক্লিনিককে জরিমানা করা হয়।
পাবনা জেলা নাগরিক মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কমরেড জাকির হোসেন বলেন, এ বিষয়ে সিভিল সার্জনের আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। যোগদান করেই ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সমিতির সংবর্ধনা নেওয়া ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুল মোমেন বলেন, তারা এভাবে সংবর্ধনা দেবে আমি বুঝে উঠতে পারিনি। এখানে নতুন যোগদান করেছি। এখনো অনেক কিছু অজানা। কয়েকদিন পরই অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান চালাব।